Upload your video and earn money 50৳/video Upload

মুক্তিযুদ্ধ না ভারত-পাক যুদ্ধ? ভারতে কী পড়ানো হচ্ছে?

মুক্তিযুদ্ধ না ভারত-পাক য শান্তির জন্য যুদ্ধ যুদ্ধর খবর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বিবিসি বাংলা প্রচলিত যুদ্ধ যুদ্ধ সমূহ রাষ্ট্রীয় যুদ্ধ গন যুদ্ধ কাকে বলে
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated

 


দিনটি ছিল ১৬  ডিসেম্বর। সালটা ১৯৭১।

কলকাতার প্রবীণ কবি ও প্রাবন্ধিক জিয়াদ আলি সেদিন কলেজ স্ট্রীটের একটি বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের উচ্ছাস। আর সাংবাদিক দিলীপ চক্রবর্তী আবেগের বশে তার খবরের কাগজের জন্য কোনও সংবাদ লিখতে পারেননি সেদিন।

কলকাতা আর বাংলাদেশের কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মি. চক্রবর্তী বেরিয়ে পড়েছিলেন শহরের রাজপথে - বাংলাদেশের স্বাধীনতা উপভোগ করতে।

এরা দুজনেই সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন কলকাতাজুড়ে যুদ্ধের নয় মাস ধরে যা যা কর্মকাণ্ড চলছিল, সেসবের সঙ্গে।

কলকাতার বাসিন্দা এদের কেউ বই লিখেছেন, কারও বা শুধুই স্মৃতি, অন্য কারও ক্যামেরায় ফ্রেম-বন্দী হয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।

কিন্তু এদের পরে? ....

বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতীয় রাজ্যগুলির বর্তমান প্রজন্ম কতটা জানে সেই ইতিহাস?

স্কুল কলেজে কতটা পড়ানো হয় সেই ইতিহাস?

বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারের ২০১৭

মুক্তিযুদ্ধ না দ্বিতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ?

দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি স্কুল - যেটি কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এক্সামিনেশনস বা আইস এসই-এর অধীন, তার দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রূপকথা চক্রবর্তী বলছিলেন, বেশ বিশদেই তাদের পড়তে হয় একাত্তরের যুদ্ধের ইতিহাস।

"তবে এটা আমাদের বইতে দ্বিতীয় ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ হিসাবে রয়েছে। বেশ বিশদেই রয়েছে, যেমন যুদ্ধের আগের ঘটনাক্রম, যুদ্ধ কবে থেকে শুরু হল, কবে শেষ হল, যুদ্ধের নেতৃত্ব কারা দিয়েছিলেন - সবই আছে বইতে," জানাচ্ছিলেন মিস চক্রবর্তী।

কিন্তু বইয়ের বাইরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও কিছু জানার আগ্রহ যখন তৈরি হয় এই ছাত্রীর, তার জন্য ভরসা বাবা মা।

"তাদের কাছ থেকেই জেনেছি কিছু কিছু, যেগুলো বইতে নেই," বললেন ওই ছাত্রী।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণীর সিলেবাসেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো হয় বিস্তারিতভাবেই।

রূপকথা চক্রবর্তী যে বোর্ডের অধীনে পড়েন, সেই আইসিএসই একটি জাতীয় শিক্ষাবোর্ড, তবে তা বেসরকারি পরিচালনাধীন। অন্যদিকে সরকারী জাতীয় বোর্ডের ইতিহাসের সিলেবাসে নেই মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধীয় কোনও কিছু।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণীর সিলেবাসেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো হয় বিস্তারিত ভাবেই।
ছবির ক্যাপশান,

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণীর সিলেবাসেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো হয় বিস্তারিতভাবেই।

মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার বড় ভূমিকা, কিন্তু স্কুলের পাঠ্যক্রমে নেই সেই ইতিহাস

ত্রিপুরার স্কুল পাঠ্যক্রমে ওই ইতিহাস পড়ানো হয় না, কারণ সেখানকার রাজ্য শিক্ষা বোর্ড অনুসরণ করে জাতীয় স্তরের সরকারী বোর্ডের পাঠ্যক্রম।

অথচ, কলকাতার মতোই ত্রিপুরার আগরতলাও মুক্তিযুদ্ধে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল, তবুও সেখানকার স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জানতেই পারে না সেই মুক্তিযুদ্ধের কথা।

গান্ধীগ্রাম উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত ইতিহাসের শিক্ষক বীরেন্দ্র ভট্টাচার্য বলছিলেন, "আমাদের যে জাতীয় পাঠ্যক্রম নীতি রয়েছে, সেটা সর্বভারতীয় স্তরে তৈরি করা হয়। তার নিয়ন্ত্রণ দিল্লির হাতে। প্রতিটা রাজ্যে শুধুমাত্র সেটা স্থানীয় ভাষায় তর্জমা করা হয়। ওই পাঠ্যক্রম যারা তৈরি করেছেন, তাদের নিশ্চই মনে হয়েছে যে বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার ইতিহাসটা ছাত্রছাত্রীদের জানার দরকার নেই। তাই তারা রাখেননি বিষয়টা। তবে স্নাতক আর স্নাতকোত্তর স্তরে ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে কিন্তু পড়ানো হয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।"

তার আক্ষেপ স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও এটা পড়ানো উচিত ছিল।

আসামের স্কুলগুলিতে ১১-১২ ক্লাসের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাসে  ৭১-এর যুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো হয়
ছবির ক্যাপশান,

আসামের স্কুলগুলিতে ১১-১২ ক্লাসের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাসে ৭১-এর যুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো হয় ।

আসামের স্কুল, কলেজ পাঠ্যক্রমে কীভাবে আছে মুক্তিযুদ্ধ?

ত্রিপুরা লাগোয়া আসামে আবার ইতিহাসের বদলে এগারো বারো ক্লাসের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে পড়ানো হয় ওই যুদ্ধের কথা।

আর বাঙালি এলাকা বরাক উপত্যকার আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরেও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত ৭১ এর ইতিহাস।

"আসাম বোর্ডের একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর যে ইতিহাসের পাঠ্যক্রম, সেখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলে কিছু নেই। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে রয়েছে বিষয়টা। তবে সেটাকে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ বলেই নামকরণ করা হয়েছে," বলছিলেন শিলচরের রাধা মাধব কলেজে ইতিহাসের অধ্যাপক সুদর্শন গুপ্ত।

তার কথায়, "আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রম, সেখানেও এটা ইতিহাসের নয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত। আর এখানেও বিষয়টির নাম কিন্তু দ্বিতীয় ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ।"

মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণের পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার দেয়া হচ্ছে

ছবির উৎস,LIBERATION WAR MUSEUM

ছবির ক্যাপশান,

মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণের পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার দেয়া হচ্ছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিস্তারিতভাবে পড়ায় ৭১ এর ইতিহাস

তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ইতিহাস স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রমে বেশ কয়েকবছর আগেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির অধীন উত্তরপাড়া প্যারিমোহন কলেজে ইতিহাসের বিভাগীয় প্রধান শর্মিষ্ঠা নাথে বলেন, "আমরা যখন ছাত্রী হিসাবে ইতিহাস পড়েছি, তখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো হত না। কিন্তু ৭-৮ বছর আগে থেকে স্নাতক স্তরের সিলেবাসে এটা অন্তর্ভুক্ত হয়। আর খুব বিশদেই পড়াই আমরা এটা"।

"এখানে মুক্তিযুদ্ধটাকে শুধু আলাদা একটা ঘটনা বলে দেখাই না আমরা। দেশভাগের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তান যেভাবে পূর্ব অংশকে অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করেছে, সেখানকার সংস্কৃতির ওপরে আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছে - যার ফলশ্রুতি ৫২র ভাষা আন্দোলন - সবই পড়াই আমরা।"

"বায়ান্ন থেকে যার শুরু, তারই তো অন্তিম পর্যায় ৭১ - এই গোটা সময়ের ইতিহাসটাই আমরা ছাত্রছাত্রীদের পড়াই," বলছিলেন শর্মিষ্ঠা নাথ।

শিক্ষক বা অধ্যাপকরা বলছেন, স্নাতকোত্তর স্তরে বা গবেষণা ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেকেই কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

সেগুলি শুধু মুক্তিযুদ্ধের সামরিক ইতিহাসে সীমাবদ্ধ থাকছে না - যুদ্ধের নানান সামাজিক দিক নিয়েও চর্চা করছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বা ইতিহাসের গবেষকরা।

Hello this is Tanvir, I am Web Designer and Expert at 192.0.0.1 facebooktwitteryoutubeinstagramexternal-link

Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.