বিভিন্ন সড়কের পরিস্থিতি
গুগল ম্যাপের তথ্যানুসারে এবং সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাখালী, রামপুরা, হাতিরঝিল, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, বাংলামোটর, নিউমার্কেট, এলিফেন্ট রোড, সায়েন্স ল্যাব, ধানমন্ডি, বিজয় সরণি, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে যানজটের চাপ রয়েছে।
বিশেষ করে, গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সংলগ্ন সড়কগুলোতে ভিড় আরও বেশি। দূরপাল্লার বাস ও যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকায় এসব এলাকায় যানজট দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠেছে।
যাত্রীদের দুর্ভোগ
গণপরিবহনের সংকট, ব্যক্তিগত গাড়ির অতিরিক্ত চাপ এবং সড়কে শৃঙ্খলাহীন যান চলাচলের কারণে সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
✅ বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
✅ অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন।
✅ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
✅ অনেকে নির্ধারিত ট্রেন ও বাস মিস করে পড়েছেন বিপাকে।
এক যাত্রী মেহেদী হাসান, যিনি মিরপুরগামী, জানান—
"গতকাল রাত পর্যন্ত যানজট ছিল, ভেবেছিলাম সকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কিন্তু এখনো গতি খুবই ধীর। ইফতারের আগেই বাসায় পৌঁছাতে পারবো কি না, নিশ্চিত নই।"
অন্যদিকে, বাড্ডা লিংক রোডে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করা হামিদুল ইসলাম বলেন—
"গাড়ির সংকট এখনো তীব্র। বেশিরভাগ গাড়ি এখনো রাতে আটকে পড়া যানজটের কবলে আছে।"
যানজটের কারণ ও পূর্বাভাস
যানজটের পেছনে মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
🚦 একযোগে কর্মজীবীদের ছুটি হওয়া – বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে সবাই রাস্তায় নেমেছেন, ফলে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
🚦 দূরপাল্লার যাত্রীদের চাপ – গ্রামে ফেরা মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় টার্মিনাল কেন্দ্রিক সড়কগুলোতে বাড়তি ভিড়।
🚦 সড়কে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ – রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় সড়ক সংকীর্ণ হয়ে গেছে।
🚦 ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা – অতিরিক্ত চাপ সামলাতে ট্রাফিক পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে।
সম্ভাব্য সমাধান ও প্রশাসনের উদ্যোগ
রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—
✔️ অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা।
✔️ বাস ও ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা।
✔️ বাস রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া।
ঈদের আগে যানজট ঢাকার জন্য একটি স্বাভাবিক চিত্র হলেও, যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে এবার পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে। আগামী কয়েকদিনেও যানজটের তীব্রতা বজায় থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যাত্রার সময় আগে থেকেই নির্ধারণ করা, বিকল্প রুট ব্যবহার করা এবং পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বের হওয়া।