ইদের আনন্দের দিনেও থেমে নেই বিতর্কের আগুন। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে এক বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী ইদের দিন প্যালেস্টাইনের পতাকা ওড়ানোর অভিযোগে চাকরি হারালেন। ওই কর্মীর নাম সাকিব খান। তিনি চুক্তিভিত্তিক (contractual) পদে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটে সাহারানপুরে। পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, ইদের দিনে সাকিব খান তার বাসভবনের ছাদে প্যালেস্টাইনের পতাকা ওড়ান। সেই দৃশ্য ভিডিওর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, এবং তা নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসনের। বিষয়টিকে “সন্দেহজনক কার্যকলাপ” ও “সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন” হিসেবে বিবেচনা করে বিদ্যুৎ দপ্তর।
চাকরি থেকে বরখাস্ত
উত্তরপ্রদেশ বিদ্যুৎ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, সরকারি কর্মীদের রাজনৈতিক বা আন্তর্জাতিক ইস্যুতে এই ধরনের প্রকাশ্য অবস্থান নেওয়া সম্পূর্ণ নিয়মবিরুদ্ধ। তদন্তের পর দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সাকিব খানকে বরখাস্ত করা হয়।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন—একজন নাগরিক হিসেবে কোনো মানবিক ইস্যুতে সহমর্মিতা প্রকাশ কি সত্যিই এত বড় অপরাধ?
কেউ কেউ বলছেন, “সাকিব খান কি শুধুমাত্র একটি পতাকা ওড়িয়েছিলেন, নাকি তিনি এক অব্যক্ত চিৎকার ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন বিশ্ব মানবতার পক্ষে?”
প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল প্রসঙ্গ
বিশ্বজুড়ে প্যালেস্টাইনের পক্ষে সাধারণ মানুষের সংহতি জানানোর ঢেউ উঠেছে। ইসরায়েল-গাজা সংঘাতে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যু ও মানবিক বিপর্যয়ের ছবি সামনে আসার পর অনেকেই প্রতিবাদী কণ্ঠে একাত্মতা জানাচ্ছেন প্যালেস্টাইনের প্রতি। তবে সরকারি চাকুরেদের ক্ষেত্রে এই সংহতি প্রকাশও অনেক সময় ‘শৃঙ্খলাভঙ্গ’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেটি আবার এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।
শেষ কথা
সাকিব খানের বরখাস্ত হওয়া শুধু একটি চাকরিচ্যুতির ঘটনা নয়, বরং এটি একটি বড় প্রশ্ন তোলে—একজন নাগরিকের মানবিক অবস্থান কি তার পেশাগত জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে? প্যালেস্টাইনের পতাকা ওড়ানোর এই ঘটনা হয়তো কিছু মানুষের কাছে ‘নীতিভ্রষ্ট আচরণ’, কিন্তু অন্য কারো কাছে এটি হয়ে উঠেছে নিপীড়িতের পক্ষে দাঁড়াবার সাহসী অভিব্যক্তি।