এই ঘটনার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিতর্কিত ও ‘ওয়ান্টেড’ নেতারা আজ হেগের দিকে শঙ্কিত চোখে তাকাচ্ছেন। অনেকে মনে করছেন, দুর্তের্তের এই পরিণতি একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে— ক্ষমতার আসনে থেকেও কেউ দায়মুক্ত নয়।
দুর্তের্তের পতনের প্রতিচ্ছবি
রদ্রিগো দুর্তের্তে এক সময় ফিলিপাইনের সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং বিতর্কিত নেতা ছিলেন। ২০১৬ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি মাদকের বিরুদ্ধে এক নির্মম যুদ্ধ শুরু করেন। এই অভিযানকে সমর্থনও পেয়েছিল দেশের একটি বড় অংশের কাছ থেকে, কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বরাবরই এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছিল।
আজ যখন দুর্তের্তে হেগে আইসিসির হেফাজতে, তখন তা এক প্রতীকী বার্তা দিচ্ছে: আন্তর্জাতিক আইন, কতটা ধীরগতিরই হোক, অবশেষে দায়ীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেই পারে।
আতঙ্কে অন্যান্য নেতা?
দুর্তের্তের ঘটনাটি দেখে অনেক বিতর্কিত নেতা ও প্রাক্তন শাসক আজ নড়েচড়ে বসছেন। আফ্রিকার কিছু দেশ, মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক শাসক, এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকজন সাবেক নেতা— যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, গুম, কিংবা গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে—তাদের জন্য বিষয়টি এক অশনি সংকেত।
আন্তর্জাতিক আইন কি সত্যিই শক্তিশালী হচ্ছে?
দুর্তের্তের গ্রেপ্তার ও বিচার প্রক্রিয়া প্রমাণ করছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ধীরে ধীরে হলেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। যদিও বড় শক্তিগুলো (যেমন: যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া) এখনো ICC-কে সম্পূর্ণ স্বীকৃতি দেয়নি, তবুও এই আদালতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই।
উপসংহার
দুর্তের্তের হেফাজতে থাকা একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত। এটি শুধু ফিলিপাইনের রাজনীতির জন্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্যই এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। যারা ক্ষমতার দম্ভে মানবাধিকারকে পায়ে দলেছেন, তাদের জন্য এখন আইসিসি যেন এক বাস্তব আতঙ্ক। হেগের ছায়া আজ অনেকের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে।